সোশ্যাল মিডিয়া কিভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:০১:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ জুলাই ২০২৪ ২৭ বার পড়া হয়েছে

সোশ্যাল মিডিয়া কিভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শিশু থেকে বৃদ্ধ বয়স সব ধরনের মানুষই এখন সোশ্যাল মিডিয়াতে একটিভ। কেউ বিনোদনের উদ্দেশ্যে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। কেউ ব্যবসায় কিংবা টাকা ইনকামের জন্য ব্যবহার করে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, ইউটিউব ইত্যাদি।

২০২৩ সালের একটা রিপোর্ট অনুযায়ী সারা পৃথিবীতে প্রায় প্রতিটি মানুষ গড়ে ১৫০ মিনিট করে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলো ব্যবহার করে।

সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ব্যবহার আসলে দোষের কিছু নয়। তবে এগুলোতে অতিমাত্রার আসক্তি আপনাকে মানসিকভাবে ক্ষতি করতে পারে।

চলুন এমন কিছু বিষয় জেনে নেই যেগুলোর মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া আপনাকে মানসিকভাবে ক্ষতি করছে।

লাইক কমেন্টস-এর মাধ্যমে ক্ষতি

একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মানুষ যখন আনন্দিত হয় তখন তার শরীরে ডোপামিন হরমোন অধিক পরিমাণে নিঃসরণ হয়।

একজন ব্যক্তি যখন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে কোন কিছু পোস্ট করে কাঙ্খিত লাইক এবং কমেন্টস পান তখন তার ডোপামিন হরমোন নিঃসরণ হয়। যা তাকে আনন্দিত করে তোলে।

কিন্তু সেই ব্যক্তি যদি এই কাঙ্খিত লাইক কমেন্টস না পান তাহলে হতাশ হয়ে পড়েন। যা তাকে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে।

ফিল্টারের ব্যবহার

টিকটক, ফেসবুক কিংবা ইনস্টাগ্রামে কোন ছবি পোস্ট করার সময় আমরা ফিল্টার ব্যবহার করি। এই ফিল্টার ব্যবহারের মাধ্যমে কোন মানুষকে বাস্তবের চাইতে অধিক সুন্দর এবং রঙিন দেখায়।

সোশ্যাল মিডিয়া কিভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে

কিন্তু বাস্তবে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে যখন তার ফিল্টার ছাড়া চেহারা দেখে সেটি তাকে মানসিকভাবে ডিপ্রেশনে ভোগায়। বাস্তব আর ভার্চুয়াল জগত কখনোই এক নয়। মানুষ তখন এই তফাৎটা ভুলে যায়। এতে করে সে অনেক হীনমন্যতায় ভোগে।

সাইবার বুলিং

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি বৃদ্ধি পেয়েছে সাইবার বুলিং এর মত অপরাধ। কারো কোনো ছবিতে কিংবা ভিডিও অথবা পোস্টে বাজে কিংবা হেয় করে কোন কমেন্টস করাই সাইবার বুলিং এর অন্তর্ভুক্ত।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রসারের ফলে মানুষ সহজেই একে অপরের সম্পর্কে মন্তব্য করতে পারে। এতে করে নেগেটিভ মন্তব্যে মানুষ তার মেজাজ হারিয়ে ফেলে।

অনেক সময় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোতে সাইবার বুলিং বাস্তব জগতে অনেক বড় দুর্ঘটনা পর্যন্ত গড়ায়।

সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলো হতে নিরাপদ থাকার উপায় কি?

• সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে নির্দিষ্ট সময় বেছে নেওযা উচিৎ। অফিসে, বাসায় কিংবা গাড়িতে সব জায়গায় আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা একটি অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। যেটির কারণে আমরা আরো বেশি এগুলোর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছি। তাই একটা নির্দিষ্ট সময়ে এগুলো ব্যবহার করুন।

• বন্ধুদের তালিকায় এমন কাউকে রাখবেন না যাদের আপনি পছন্দ করেন না। বিতর্ক সৃষ্টিকারী কিংবা গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকুন। নিজের বন্ধু তালিকা ক্লিন রাখুন আপনিও মানসিক শান্তিতে থাকতে পারবেন।

• বিনোদনের উৎস হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়াকে বেছে না নিয়ে অন্যান্য জায়গায় সময় কাটান। বাইরে খেলাধুলা করতে পারেন।

এতকিছুর পরেও আপনি যদি মানসিক অবসাদে ভুগেন তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সোশ্যাল মিডিয়ার মানসিক ক্ষতিকর দিক থেকে দূরে থাকতে আপনাকে অবশ্যই ইন্টারনেট ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

সোশ্যাল মিডিয়া কিভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে

আপডেট সময় : ১২:০১:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ জুলাই ২০২৪

শিশু থেকে বৃদ্ধ বয়স সব ধরনের মানুষই এখন সোশ্যাল মিডিয়াতে একটিভ। কেউ বিনোদনের উদ্দেশ্যে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। কেউ ব্যবসায় কিংবা টাকা ইনকামের জন্য ব্যবহার করে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, ইউটিউব ইত্যাদি।

২০২৩ সালের একটা রিপোর্ট অনুযায়ী সারা পৃথিবীতে প্রায় প্রতিটি মানুষ গড়ে ১৫০ মিনিট করে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলো ব্যবহার করে।

সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ব্যবহার আসলে দোষের কিছু নয়। তবে এগুলোতে অতিমাত্রার আসক্তি আপনাকে মানসিকভাবে ক্ষতি করতে পারে।

চলুন এমন কিছু বিষয় জেনে নেই যেগুলোর মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া আপনাকে মানসিকভাবে ক্ষতি করছে।

লাইক কমেন্টস-এর মাধ্যমে ক্ষতি

একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মানুষ যখন আনন্দিত হয় তখন তার শরীরে ডোপামিন হরমোন অধিক পরিমাণে নিঃসরণ হয়।

একজন ব্যক্তি যখন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে কোন কিছু পোস্ট করে কাঙ্খিত লাইক এবং কমেন্টস পান তখন তার ডোপামিন হরমোন নিঃসরণ হয়। যা তাকে আনন্দিত করে তোলে।

কিন্তু সেই ব্যক্তি যদি এই কাঙ্খিত লাইক কমেন্টস না পান তাহলে হতাশ হয়ে পড়েন। যা তাকে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে।

ফিল্টারের ব্যবহার

টিকটক, ফেসবুক কিংবা ইনস্টাগ্রামে কোন ছবি পোস্ট করার সময় আমরা ফিল্টার ব্যবহার করি। এই ফিল্টার ব্যবহারের মাধ্যমে কোন মানুষকে বাস্তবের চাইতে অধিক সুন্দর এবং রঙিন দেখায়।

সোশ্যাল মিডিয়া কিভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে

কিন্তু বাস্তবে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে যখন তার ফিল্টার ছাড়া চেহারা দেখে সেটি তাকে মানসিকভাবে ডিপ্রেশনে ভোগায়। বাস্তব আর ভার্চুয়াল জগত কখনোই এক নয়। মানুষ তখন এই তফাৎটা ভুলে যায়। এতে করে সে অনেক হীনমন্যতায় ভোগে।

সাইবার বুলিং

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি বৃদ্ধি পেয়েছে সাইবার বুলিং এর মত অপরাধ। কারো কোনো ছবিতে কিংবা ভিডিও অথবা পোস্টে বাজে কিংবা হেয় করে কোন কমেন্টস করাই সাইবার বুলিং এর অন্তর্ভুক্ত।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রসারের ফলে মানুষ সহজেই একে অপরের সম্পর্কে মন্তব্য করতে পারে। এতে করে নেগেটিভ মন্তব্যে মানুষ তার মেজাজ হারিয়ে ফেলে।

অনেক সময় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোতে সাইবার বুলিং বাস্তব জগতে অনেক বড় দুর্ঘটনা পর্যন্ত গড়ায়।

সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলো হতে নিরাপদ থাকার উপায় কি?

• সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে নির্দিষ্ট সময় বেছে নেওযা উচিৎ। অফিসে, বাসায় কিংবা গাড়িতে সব জায়গায় আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা একটি অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। যেটির কারণে আমরা আরো বেশি এগুলোর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছি। তাই একটা নির্দিষ্ট সময়ে এগুলো ব্যবহার করুন।

• বন্ধুদের তালিকায় এমন কাউকে রাখবেন না যাদের আপনি পছন্দ করেন না। বিতর্ক সৃষ্টিকারী কিংবা গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকুন। নিজের বন্ধু তালিকা ক্লিন রাখুন আপনিও মানসিক শান্তিতে থাকতে পারবেন।

• বিনোদনের উৎস হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়াকে বেছে না নিয়ে অন্যান্য জায়গায় সময় কাটান। বাইরে খেলাধুলা করতে পারেন।

এতকিছুর পরেও আপনি যদি মানসিক অবসাদে ভুগেন তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সোশ্যাল মিডিয়ার মানসিক ক্ষতিকর দিক থেকে দূরে থাকতে আপনাকে অবশ্যই ইন্টারনেট ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে।