এমপক্স রোগের লক্ষণ এবং বাঁচার উপায়

- আপডেট সময় : ০৩:৩২:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪ ৬৫ বার পড়া হয়েছে
করোনার পর আবার বিশ্বের নতুন একটি আতঙ্কের নাম হচ্ছে এমপক্স। তাই আমাদের এমপক্স রোগের লক্ষণ সম্পর্কে ভালোভাবে জানা উচিত। এমপক্স ভাইরাস থেকে নিজে এবং পরিবারকে বাঁচাতে এই বিষয় গুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সাম্প্রতিক সময়ে সারা বিশ্ব জুড়ে এমপক্স রোগের প্রকোপ বেড়ে চলছে। সেই সাথে বাড়ছে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা এবং মৃত্যুহার। যা নিয়ে ইতিমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষকরা বলেছেন, এমপক্স রোগের হাত থেকে বাঁচার জন্য এর বিস্তার রোধ করতে হবে। অর্থাৎ ভাইরাসটির মিউটেশন বা ছড়ানোর প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। তাহলে এটি করোনার মতো ভয়াবহ আকার নেওয়ার সুযোগ পাবে না। সেই সাথে আমাদের এমপক্স রোগের লক্ষণ সম্পর্কেও ভালোভাবে জানতে হবে।
চলুন জেনে নেই এমপক্স রোগটি কিভাবে একজনের থেকে অন্য জনের মধ্যে ছড়ায়।
এমপক্স রোগ ছড়ানোর প্রক্রিয়া
এই রোগের লক্ষণ জানার আগে চলুন জেনে নেই এটি কিভাবে আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
১. বিশেষজ্ঞ এবং গবেষকদের মতে এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ। রোগীর কথা বলার সময় তার নিঃশ্বাস এবং মুখের বাতাসের মাধ্যমে এটি অন্যের শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
২. কেউ যদি আক্রান্ত রোগীর ত্বক কিংবা শরীরের কোন অংশ স্পর্শ করে তাহলেও এমপক্স রোগ ছড়াতে পারে।
৩. আক্রান্ত রোগীর ব্যবহার্য কোন জিনিস অন্য সুস্থ মানুষ ব্যবহার করলে রোগ ছড়াতে পারে।
৪. আক্রান্ত রোগীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করলে অবশ্যই একজনের দেহ থেকে অন্য জনের দেহে হয় এমপক্স রোগটি ছড়াতে পারে।
৫. আক্রান্ত রোগীর সাথে খাবার খেলেও এমপক্স ছড়াতে পারে।
এমপক্স রোগের লক্ষণ গুলো কি কি
১. এমপক্স ভাইরাসে আক্রমণ হলে রোগীর শরীরে প্রাথমিকভাবে জ্বর অনুভব হবে।
২. স্বাভাবিক ভাবে রোগীর হালকা থেকে প্রচন্ড মাথা ব্যথা হতে পারে।
৩. সেই সাথে পিঠ এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা হতে পারে।
৪. এমপক্স রোগের লক্ষণ গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মাংসপেশীতে টান লাগা এবং হাড়ের ভেতর ব্যথা অনুভব করা।
৫. আক্রান্ত রোগী শারীরিকভাবে অনেক দুর্বল অনুভব করবে।
৬. রোগের লক্ষণ গুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো শরীরে ফুসকুড়ি দেখা। প্রাথমিক দিকে ফুসকুড়ি গুলো হালকা মনে হলেও ধীরে ধীরে এটি কালচে হয়ে যাবে সেই সাথে শরীরের অন্যান্য অংশ গুলোতে এটা ছড়িয়ে পড়বে।
এমপক্স থেকে বাঁচার উপায় কি
ইতিমধ্য আমরা এমপক্স রোগের লক্ষণ এবং ছাড়ানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে জেনে গিয়েছে। এবার চলুন জেনে নেই এই রোগ কিভাবে প্রতিরোধ করতে পারবেন কিংবা এ রোগ থেকে নিজেকে কিভাবে রক্ষা করতে পারবেন।
১. বায়ু দূষণ ও বাতাসের মাধ্যমে এমপক্স রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেজন্য নিয়মিত মাস্ক এবং চশমা ব্যবহার করুন।
২. অপরিষ্কার হাত দিয়ে মুখের বিভিন্ন অংশ যেমন নাক, মুখ কিংবা চোখ ধরা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।
৩. এমপক্স রোগ থেকে বাঁচার জন্য নিয়মিত হাত পরিষ্কার করুন এর জন্য স্যানিটাইজার কিংবা সাবান ব্যবহার করতে পারেন।
৪. খুব বেশি জরুরি প্রয়োজন না হলে এমপক্স রোগে আক্রান্ত রোগী এবং তাদের পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।। আক্রান্ত সদস্য কিংবা পরিবারকেও যথাসম্ভব আইসোলেশনে রাখুন।
৫. আক্রান্ত রোগীর ব্যবহার করা জিনিসপত্র ব্যবহার করবেন না এবং তার সাথে শারীরিক মেলামেশা থেকেও দূরে থাকুন।
৬. বিশেষজ্ঞদের মতে এমপক্স রোগে আক্রান্ত রোগের সাথে কথা বললেও সেটা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তাই কথা বলার সময় প্রয়োজনীয় সেফটি এবং প্রোটোকল মেনে চলুন।
১০. বাড়িতে পোষা প্রাণী থাকলে সেগুলোকে আক্রান্ত রোগীর থেকে দূরে রাখুন।
এমপক্স রোগের লক্ষণ এবং বাঁচার উপায়
অন্যান্য সতর্কতা
যেকোনো রোগকে প্রতিরোধ এবং প্রতিকার করতে সেই সম্পর্কে অনেক ভালোভাবে জানতে হবে। এমপক্সের লক্ষণ এবং বাঁচার উপায় গুলি শুধুমাত্র জানলে চলবে না বরং বাস্তব জীবনে সেগুলোকে অবলম্বন করতে হবে।
এছাড়া যে কোন ধরনের ভাইরাস জনিত রোগ থেকে নিজেকে সেইফ রাখার জন্য বাইরের যেকোনো খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
বিশেষজ্ঞদের মতো এমপক্স রোগের সবচাইতে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা। তাই এমপক্স রোগের লক্ষণ সম্পর্কে আপনার বাড়ির শিশুদেরকে ধারণা দিন এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলার অভ্যাস গড়ে তুলুন।