তাহাজ্জুদ নামাজের সময় ও নিয়ত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:০২:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪ ৬৫ বার পড়া হয়েছে

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় ও নিয়ত

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় নিয়ে আমাদের অনেকের মনের মধ্যে নানা রকম প্রশ্ন আছে। অনেকের মনের মধ্যে এই নিয়ে কিছু ভুল ধারণাও রয়েছে। নফল নামাজের মত সবচাইতে ফজিলত পূর্ণ নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ। মুসলিমদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার আগে আমাদের প্রিয় নবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য তাহাজ্জুদ নামাজ আবশ্যক ছিল। আমাদের প্রিয় নবী এই নামাজ নিয়মিত আদায় করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামদের নামাজ আদায় করার জন্য তাগিদ দিতেন। তাহাজ্জুদ নামাজের অনেক ফজিলত রয়েছে।

তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

তাহাজ্জুদ নামাজে উত্তম সময় রাতের শেষভাগে ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে আদায় করা। তবে এশার নামাজের পর থেকে রাতে ঘুমানোর আগে যে কোন সময় তাহাজ্জুদ আদায় করা যায়। তাহাজ্জুদ নামাজে সবচাইতে উত্তম সময় হলো রাতের মধ্যভাগ এবং শেষভাগ। অর্থাৎ মধ্যরাতের পরে কিংবা রাতের দুই তৃতীয়াংশে যে সময়টি আসে সেটি হচ্ছে তাহাজ্জুদ পড়ার জন্য সবচাইতে উপযুক্ত সময়। তবে আপনি মধ্যরাতের পর থেকে ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত যেকোনো সময় তাহাজ্জুদ পড়তে পারবেন। সেহরির সময় শেষ হলে এবং ফজরের ওয়াক্ত শুরু হলে তাহাজ্জুতের সময় শেষ হয়ে যায়। আমাদের প্রিয় নবী রাসুল (সা.) এর সময় তাহাজ্জুদের জন্য আলাদাভাবে আযান দেওয়া হতো।

তাহাজ্জুদ পড়ার নিয়ম

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় সম্পর্কে তো জানলেন এবার তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম কি চলুন সেটি জেনে নেই।

তাহাজ্জুদ সহ সকল বাকী নামাজের নিয়ত মনে মনে করতে হয়। তাই তাহাজ্জুদ নামাজের সময় মনে মনে এমন সংকল্প করা “আমি তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করছি” বলে নামাজ আদায় করলে তাহাজ্জুদ নামাজ হয়ে যাবে। অন্য সকল সুন্নাত এবং নফল নামাজের মত তাহাজ্জুদ নামাজের সূরা নিম্নস্বরে পড়তে হয় এবং ইকামতের প্রয়োজন হয় না।

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় ও নিয়ত

অনেকে আবার মনে করেন তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে জ্বীন আসে এ ধারণা সঠিক নয়।

তাহাজ্জুদ নামাজের রাকাত সংখ্যা

তাহাজ্জুদ নামাজের রাকাত সম্পর্কে ২ রাকাত থেকে ২০ রাকাত পর্যন্ত পড়ার বিভিন্ন বর্ণনা রয়েছে। আয়েশা (র.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) সারাবছর ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ এবং কখনও কখনো ১২ রাকাত করে তাহাজ্জুত আদায় করেছেন। আমরা অন্তত ৪ রাকাত থেকে শুরু করে ১২ রাকাত পর্যন্ত আদায় করার চেষ্টা করবো। তবে ২ রাকাত আদায় করলেও তাহাজ্জুদ এর নেকি পাওয়া যাবে।

ইবনে আব্বাস (র.) বলেন, যে ব্যক্তি এশার নামাজ শেষ করে ২ অথবা তার অধিক নফল নামাজ আদায় করবে সে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নেকি পাবে।

যেভাবে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করব

আমাদের প্রিয় নবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ২ রাকাত করে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতেন। আবার কোন কোন বর্ণনায় পাওয়া গেছে এক সালামে তিনি ৮ রাকাত পড়েছেন। তবে তাহাজ্জুদের নামাজ ২ রাকাত করে পড়া উত্তম।

এই নামাজে নির্দিষ্ট কোন সূরা নেই। রাসূল (সা.) লম্বা কেরাত পড়তেন। সেই সাথে রুকু এবং সিজদা তে তসবিহ অনেকবার পড়া যায়। তাহাজ্জুদের নামাজে সেজদাহতে কোরআন হাদিসের বর্ণিত বিভিন্ন দোয়া পাঠের নিয়মও রয়েছে।

তাহাজ্জুদ নামাজ সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় সম্পর্কে আশা করি আপনাদের স্পষ্ট ধারণা হয়েছে। সেই সাথে আপনারা ইতিমধ্য জেনে গিয়েছেন তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত এবং নিয়ম। তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে জিন হাজির হয় এরকম ভুল ধারণা আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে। এবং এটিও প্রচলিত আছে যে একবার এই নামাজ পড়লে নিয়মিত আদায় করতে হয়। তবে এগুলোর কোনোটিই সঠিক নয়। তাহাজ্জুদের নামাজ নিয়মিত আদায় করতে পারলে ভালো কিন্তু না পারলে কোন গুনাহ নেই।

আবার অনেকেই মনে করেন বেতের নামাজ আদায় করলে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা যায় না। এটিও ভুল ধারণা বরং বিতর নামাজের পরও তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা যায়। আবার অনেকে তাহাজ্জুদ নামাজের প্রথম রাকাতে আয়াতুল কুরসি এবং সূরা ইখলাস এর বাধ্যবাধকতার কথা বলেন। এগুলো সঠিক নয়। তবে নামাজের মধ্যে যত বেশি লম্বা সূরা এবং কেরাত পড়া যাবে নেকিও তত বেশি পাওয়া যাবে।

আশা করি আপনারা এখন তাহাজ্জুদ নামাজের সময় নিয়ত এবং নিয়ত সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পেরেছেন।

মেট্রোরেল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৪ বিস্তারিত জানতে এখানে প্রবেশ করুন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় ও নিয়ত

আপডেট সময় : ০৭:০২:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় নিয়ে আমাদের অনেকের মনের মধ্যে নানা রকম প্রশ্ন আছে। অনেকের মনের মধ্যে এই নিয়ে কিছু ভুল ধারণাও রয়েছে। নফল নামাজের মত সবচাইতে ফজিলত পূর্ণ নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ। মুসলিমদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার আগে আমাদের প্রিয় নবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য তাহাজ্জুদ নামাজ আবশ্যক ছিল। আমাদের প্রিয় নবী এই নামাজ নিয়মিত আদায় করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামদের নামাজ আদায় করার জন্য তাগিদ দিতেন। তাহাজ্জুদ নামাজের অনেক ফজিলত রয়েছে।

তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

তাহাজ্জুদ নামাজে উত্তম সময় রাতের শেষভাগে ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে আদায় করা। তবে এশার নামাজের পর থেকে রাতে ঘুমানোর আগে যে কোন সময় তাহাজ্জুদ আদায় করা যায়। তাহাজ্জুদ নামাজে সবচাইতে উত্তম সময় হলো রাতের মধ্যভাগ এবং শেষভাগ। অর্থাৎ মধ্যরাতের পরে কিংবা রাতের দুই তৃতীয়াংশে যে সময়টি আসে সেটি হচ্ছে তাহাজ্জুদ পড়ার জন্য সবচাইতে উপযুক্ত সময়। তবে আপনি মধ্যরাতের পর থেকে ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত যেকোনো সময় তাহাজ্জুদ পড়তে পারবেন। সেহরির সময় শেষ হলে এবং ফজরের ওয়াক্ত শুরু হলে তাহাজ্জুতের সময় শেষ হয়ে যায়। আমাদের প্রিয় নবী রাসুল (সা.) এর সময় তাহাজ্জুদের জন্য আলাদাভাবে আযান দেওয়া হতো।

তাহাজ্জুদ পড়ার নিয়ম

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় সম্পর্কে তো জানলেন এবার তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম কি চলুন সেটি জেনে নেই।

তাহাজ্জুদ সহ সকল বাকী নামাজের নিয়ত মনে মনে করতে হয়। তাই তাহাজ্জুদ নামাজের সময় মনে মনে এমন সংকল্প করা “আমি তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করছি” বলে নামাজ আদায় করলে তাহাজ্জুদ নামাজ হয়ে যাবে। অন্য সকল সুন্নাত এবং নফল নামাজের মত তাহাজ্জুদ নামাজের সূরা নিম্নস্বরে পড়তে হয় এবং ইকামতের প্রয়োজন হয় না।

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় ও নিয়ত

অনেকে আবার মনে করেন তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে জ্বীন আসে এ ধারণা সঠিক নয়।

তাহাজ্জুদ নামাজের রাকাত সংখ্যা

তাহাজ্জুদ নামাজের রাকাত সম্পর্কে ২ রাকাত থেকে ২০ রাকাত পর্যন্ত পড়ার বিভিন্ন বর্ণনা রয়েছে। আয়েশা (র.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) সারাবছর ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ এবং কখনও কখনো ১২ রাকাত করে তাহাজ্জুত আদায় করেছেন। আমরা অন্তত ৪ রাকাত থেকে শুরু করে ১২ রাকাত পর্যন্ত আদায় করার চেষ্টা করবো। তবে ২ রাকাত আদায় করলেও তাহাজ্জুদ এর নেকি পাওয়া যাবে।

ইবনে আব্বাস (র.) বলেন, যে ব্যক্তি এশার নামাজ শেষ করে ২ অথবা তার অধিক নফল নামাজ আদায় করবে সে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নেকি পাবে।

যেভাবে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করব

আমাদের প্রিয় নবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ২ রাকাত করে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতেন। আবার কোন কোন বর্ণনায় পাওয়া গেছে এক সালামে তিনি ৮ রাকাত পড়েছেন। তবে তাহাজ্জুদের নামাজ ২ রাকাত করে পড়া উত্তম।

এই নামাজে নির্দিষ্ট কোন সূরা নেই। রাসূল (সা.) লম্বা কেরাত পড়তেন। সেই সাথে রুকু এবং সিজদা তে তসবিহ অনেকবার পড়া যায়। তাহাজ্জুদের নামাজে সেজদাহতে কোরআন হাদিসের বর্ণিত বিভিন্ন দোয়া পাঠের নিয়মও রয়েছে।

তাহাজ্জুদ নামাজ সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় সম্পর্কে আশা করি আপনাদের স্পষ্ট ধারণা হয়েছে। সেই সাথে আপনারা ইতিমধ্য জেনে গিয়েছেন তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত এবং নিয়ম। তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে জিন হাজির হয় এরকম ভুল ধারণা আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে। এবং এটিও প্রচলিত আছে যে একবার এই নামাজ পড়লে নিয়মিত আদায় করতে হয়। তবে এগুলোর কোনোটিই সঠিক নয়। তাহাজ্জুদের নামাজ নিয়মিত আদায় করতে পারলে ভালো কিন্তু না পারলে কোন গুনাহ নেই।

আবার অনেকেই মনে করেন বেতের নামাজ আদায় করলে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা যায় না। এটিও ভুল ধারণা বরং বিতর নামাজের পরও তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা যায়। আবার অনেকে তাহাজ্জুদ নামাজের প্রথম রাকাতে আয়াতুল কুরসি এবং সূরা ইখলাস এর বাধ্যবাধকতার কথা বলেন। এগুলো সঠিক নয়। তবে নামাজের মধ্যে যত বেশি লম্বা সূরা এবং কেরাত পড়া যাবে নেকিও তত বেশি পাওয়া যাবে।

আশা করি আপনারা এখন তাহাজ্জুদ নামাজের সময় নিয়ত এবং নিয়ত সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পেরেছেন।

মেট্রোরেল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৪ বিস্তারিত জানতে এখানে প্রবেশ করুন।