তওবা করার নিয়ম ও দোয়া

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:২৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪ ৫২ বার পড়া হয়েছে

তওবা করার নিয়ম ও দোয়া

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

একজন মুসলমানের অবশ্যই তওবা করার নিয়ম এবং দোয়া জানা থাকা উচিত। মুসলমান হিসেবে আমাদের অবশ্যই গুনাহ মুক্ত জীবন যাপন করা উচিত। সেই সাথে আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী অসৎ কাজ থেকে দূরে থাকা প্রয়োজন। কিন্তু অনেক সময় শয়তানের প্ররোচনায় আমরা পাপ কাজ করে ফেলি। কিছুক্ষণ পরেই আবার সেই পাপ কাজের জন্য অনুশোচনায় ভুগি। তাইতো মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদের গুনাহ মুক্তির জন্য দোয়া শিখিয়েছেন।

গুনাহ থেকে মুক্তি লাভের জন্য তওবা করার মধ্য দিয়ে আমরা আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে পারি। পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তওবা করার নিয়ম ও দোয়া উপস্থাপন করা হলো।

তওবা করার দোয়া

বাংলা উচ্চারণ

“আসতাগফিরুল্ল-হাল আ’জিমাল্লাজি লা-ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হা’ইয়ুল ক্বাইয়ুমু ওয়া আতুবু ইলাইহি”

বাংলা অর্থ: আমি মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। মহান আল্লাহতালা ছাড়া আমার ইবাদতের আর কোন যোগ্য ও উপাস্য নেই। তিনি চিরঞ্জীব চিরস্থায়ী। আর তার কাছে আমি তওবা পাঠ করে অনুগত প্রার্থনা করছি।

তওবা করার নিয়ম এবং দোয়া সম্পর্কে তিরমিজি শরীফের একটি হাদিসে বর্ণিত আছে, আমাদের প্রিয় নবী রাসুল (সা.) বলেছেন “যে ব্যক্তি এই দোয়াটি পাঠ করবে মহান আল্লাহ তা’আলা তাকে ক্ষমা করে দিবেন এমনকি যদি সে জিহাদের ময়দান ছেড়ে পালিয়ে আসা কোন আসামিও হয়।”

আমাদের রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপরোক্ত তওবার দোয়াটি নিজে পাঠ করতেন এবং তার সকল উম্মত কেউ শিখিয়েছেন।

আমাদের পবিত্র কুরআনে সূরা আন নূরের ৩৩ নম্বর আয়াতে বর্ণিত আছে, “মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা সকলে মহান আল্লাহর কাছে তওবা পাঠ করো, খাঁটি তওবা।”

তওবা করার নিয়ম

তবে শুধুমাত্র তওবা পাঠ করলেই যে সেটি কবুল হবে ব্যাপারটা সেরকম নয়। তওবা করার কিছু পূর্ব শর্ত এবং নিয়ম রয়েছে। যেগুলো মেনে সঠিকভাবে তওবা পাঠ করলে মহান আল্লাহ তায়ালা তা কবুল করবেন।

১. তওবা করার সময় পূর্বের সকল গুনাহ এবং পাপ কাজ বাদ দেওয়ার অঙ্গীকার করতে হবে।

২. অতীতের সকল পাপ এবং ত্রুটি গুলি আল্লাহর কাছে স্বীকার করে অনুতপ্ত এবং লজ্জিত হতে হবে।

৩. পরবর্তীতে আর কোন পাপ কাজ না করার প্রতিজ্ঞা করতে হবে।

৪. লজ্জিত এবং অনুতপ্ত হয়ে সমস্ত গুনাহের জন্য মাফ চাইতে হবে।

৫. যদি কোন বান্দার হক কিংবা অধিকার নষ্ট করে থাকে তাহলে তাকে সেটি ফিরিয়ে দিতে হবে। আর যদি সেটা ফিরিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য না থাকে তাহলে তার কাছ থেকে ক্ষমা নিতে হবে।

৬.. মনের মধ্যে সবসময় এটা রাখতে হবে যে আমি গুনাহগার কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত দয়ালু এবং ক্ষমাশীল। তাই তিনি আমার তওবা কবুল করবেন।

৭. তওবা করার নিয়ম গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তওবার পর থেকে সমস্ত রকমের পাপ কাজ থেকে দূরে থাকা। তারপর বেশি বেশি নেক আমল করা।

তওবা করার নিয়ম ও দোয়া

৮. তওবা করার পর যদি কোন কারণে আবার ভুল হয়ে যায় কিংবা কোনো পাপ কাজ হয়ে যায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আবারো তওবা করে ফিরে আসতে হবে। এবং তা মৃত্যু পর্যন্ত চলবে।

তওবা করার নিয়ম গুলি তো জানলেন। আপনি বুঝবেন কিভাবে যে আপনার তওবার দোয়া কবুল হয়েছে? এ সম্পর্কে বড় বড় ইসলামিক স্কলাররা বলেন, যদি কোন ব্যক্তি তওবার পরের জীবন এবং তওবার আগের জীবনে থেকে অনেক বেশি ভালো হয়। অর্থাৎ তওবা করার পর থেকে পাপ কাজ ছেড়ে দিয়েছে এবং সৎ কাজ বেশি বেশি করছে। সেই সাথে আগের থেকে বেশি নেক আমল করতে পারছে। তাহলে ধরে নেয়া যায় সে তওবা করে মহান আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ লাভ করেছে।

তাই তওবা করার নিয়ম এবং দোয়া করে নিজে ভালোভাবে আমল করুন এবং অন্যকে আমল করতে উৎসাহিত প্রদান করুন।

গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঘরোয়া উপায় জানতে এখানে প্রবেশ করুন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

তওবা করার নিয়ম ও দোয়া

আপডেট সময় : ১১:২৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪

একজন মুসলমানের অবশ্যই তওবা করার নিয়ম এবং দোয়া জানা থাকা উচিত। মুসলমান হিসেবে আমাদের অবশ্যই গুনাহ মুক্ত জীবন যাপন করা উচিত। সেই সাথে আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী অসৎ কাজ থেকে দূরে থাকা প্রয়োজন। কিন্তু অনেক সময় শয়তানের প্ররোচনায় আমরা পাপ কাজ করে ফেলি। কিছুক্ষণ পরেই আবার সেই পাপ কাজের জন্য অনুশোচনায় ভুগি। তাইতো মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদের গুনাহ মুক্তির জন্য দোয়া শিখিয়েছেন।

গুনাহ থেকে মুক্তি লাভের জন্য তওবা করার মধ্য দিয়ে আমরা আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে পারি। পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তওবা করার নিয়ম ও দোয়া উপস্থাপন করা হলো।

তওবা করার দোয়া

বাংলা উচ্চারণ

“আসতাগফিরুল্ল-হাল আ’জিমাল্লাজি লা-ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হা’ইয়ুল ক্বাইয়ুমু ওয়া আতুবু ইলাইহি”

বাংলা অর্থ: আমি মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। মহান আল্লাহতালা ছাড়া আমার ইবাদতের আর কোন যোগ্য ও উপাস্য নেই। তিনি চিরঞ্জীব চিরস্থায়ী। আর তার কাছে আমি তওবা পাঠ করে অনুগত প্রার্থনা করছি।

তওবা করার নিয়ম এবং দোয়া সম্পর্কে তিরমিজি শরীফের একটি হাদিসে বর্ণিত আছে, আমাদের প্রিয় নবী রাসুল (সা.) বলেছেন “যে ব্যক্তি এই দোয়াটি পাঠ করবে মহান আল্লাহ তা’আলা তাকে ক্ষমা করে দিবেন এমনকি যদি সে জিহাদের ময়দান ছেড়ে পালিয়ে আসা কোন আসামিও হয়।”

আমাদের রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপরোক্ত তওবার দোয়াটি নিজে পাঠ করতেন এবং তার সকল উম্মত কেউ শিখিয়েছেন।

আমাদের পবিত্র কুরআনে সূরা আন নূরের ৩৩ নম্বর আয়াতে বর্ণিত আছে, “মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা সকলে মহান আল্লাহর কাছে তওবা পাঠ করো, খাঁটি তওবা।”

তওবা করার নিয়ম

তবে শুধুমাত্র তওবা পাঠ করলেই যে সেটি কবুল হবে ব্যাপারটা সেরকম নয়। তওবা করার কিছু পূর্ব শর্ত এবং নিয়ম রয়েছে। যেগুলো মেনে সঠিকভাবে তওবা পাঠ করলে মহান আল্লাহ তায়ালা তা কবুল করবেন।

১. তওবা করার সময় পূর্বের সকল গুনাহ এবং পাপ কাজ বাদ দেওয়ার অঙ্গীকার করতে হবে।

২. অতীতের সকল পাপ এবং ত্রুটি গুলি আল্লাহর কাছে স্বীকার করে অনুতপ্ত এবং লজ্জিত হতে হবে।

৩. পরবর্তীতে আর কোন পাপ কাজ না করার প্রতিজ্ঞা করতে হবে।

৪. লজ্জিত এবং অনুতপ্ত হয়ে সমস্ত গুনাহের জন্য মাফ চাইতে হবে।

৫. যদি কোন বান্দার হক কিংবা অধিকার নষ্ট করে থাকে তাহলে তাকে সেটি ফিরিয়ে দিতে হবে। আর যদি সেটা ফিরিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য না থাকে তাহলে তার কাছ থেকে ক্ষমা নিতে হবে।

৬.. মনের মধ্যে সবসময় এটা রাখতে হবে যে আমি গুনাহগার কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত দয়ালু এবং ক্ষমাশীল। তাই তিনি আমার তওবা কবুল করবেন।

৭. তওবা করার নিয়ম গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তওবার পর থেকে সমস্ত রকমের পাপ কাজ থেকে দূরে থাকা। তারপর বেশি বেশি নেক আমল করা।

তওবা করার নিয়ম ও দোয়া

৮. তওবা করার পর যদি কোন কারণে আবার ভুল হয়ে যায় কিংবা কোনো পাপ কাজ হয়ে যায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আবারো তওবা করে ফিরে আসতে হবে। এবং তা মৃত্যু পর্যন্ত চলবে।

তওবা করার নিয়ম গুলি তো জানলেন। আপনি বুঝবেন কিভাবে যে আপনার তওবার দোয়া কবুল হয়েছে? এ সম্পর্কে বড় বড় ইসলামিক স্কলাররা বলেন, যদি কোন ব্যক্তি তওবার পরের জীবন এবং তওবার আগের জীবনে থেকে অনেক বেশি ভালো হয়। অর্থাৎ তওবা করার পর থেকে পাপ কাজ ছেড়ে দিয়েছে এবং সৎ কাজ বেশি বেশি করছে। সেই সাথে আগের থেকে বেশি নেক আমল করতে পারছে। তাহলে ধরে নেয়া যায় সে তওবা করে মহান আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ লাভ করেছে।

তাই তওবা করার নিয়ম এবং দোয়া করে নিজে ভালোভাবে আমল করুন এবং অন্যকে আমল করতে উৎসাহিত প্রদান করুন।

গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঘরোয়া উপায় জানতে এখানে প্রবেশ করুন।