ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৫৯:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৪ ৫১ বার পড়া হয়েছে

ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে তালাক হচ্ছে সর্বনিম্ন পর্যায়ের বৈধ কাজ। একজন স্ত্রী এবং স্বামীর মধ্যে যদি কোন ভাবেই বনি বনা সম্ভব না হয় তাহলে সেটির চূড়ান্ত পর্যায়ে হচ্ছে ডিভোর্স বা তালাক। কিন্তু ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই না জেনে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন।

তালাকের মাধ্যমে যদিও একজন পুরুষ এবং মহিলা মানসিকভাবে স্বস্তি পায় কিন্তু তাদের মধ্যে যদি কোন সন্তান থেকে থাকে তাহলে তার জন্য জীবন অনেকটা কঠিন হয়ে যায়। যেকোনো বৈধ কিংবা যুক্তি সংক্রান্ত কারণে একজন স্বামী এবং স্ত্রী পরস্পর থেকে আলাদা হওয়ার জন্য ডিভোর্স দিতে পারে। তবে ডিভোর্স দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু আইন মানতে হবে।

আইন অনুযায়ী ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম কিংবা কিভাবে তালাক দেওয়া হয় সে ব্যাপারে এক জীবন আইনজীবীর সাথে কথা বলে আপনাদের সাথে কিছু পরামর্শ শেয়ার করার চেষ্টা করেছি।

ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম

আইনজীবীদের মতে সাধারণত তালাক দেওয়ার জন্য প্রথমে একটি তালাকের নোটিশ পাঠানো হয়। আবার আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে কাবিন নামার ১৮ নম্বর কলামে যদি স্ত্রী ডিভোর্সের দেওয়ার অনুমতি না পেয়ে থাকেন তাহলে স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাক দেওয়া যায় না।

সে ক্ষেত্রে একজন স্ত্রী পারিবারিক আদালতে মামলা করার মাধ্যমে ডিভোর্সের নোটিশ পাঠাতে পারে। তবে এই তালাকের নোটিশ পাঠানোর বিষয়ে কিছু আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

স্বামী ও স্ত্রী অভিক্ষেত্রে তালাক দেওয়ার নিয়ম প্রায় একই রকম।

স্বামী তার স্ত্রীকে কিংবা স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক দেওয়ার নিয়ম

* মুসলিম পারিবারিক আইন ১৯৬১ সালের ৭(১) ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, কোন পুরুষ তার স্ত্রীকে কিংবা কোন মহিলা তার স্বামীকে তালাক দিতে চাইলে সবার আগে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা পৌরসভার চেয়ারম্যান কে তালাকের নোটিশ পাঠাতে হয়। তারপর ওই নোটিশের অনুলিপিটি স্বামী অথবা স্ত্রীকে পাঠাতে হবে।

* এই আইন যদি কেউ লংঘন করে তাহলে তার ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড কিংবা ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। সেই সাথে উভয় দণ্ডায় হতে পারে।

ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম

* তালাকের নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে ও সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান কিংবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একটি সালিশ বৈঠক গঠন করবেন। তিনি যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন তালাক রোধ করার জন্য।

স্বামী অথবা স্ত্রী যদি তালাকের নোটিশটি ৯০ দিনের ভিতর প্রত্যাহার না করে অথবা ৯০ দিন অতিবাহিত হয়ে যায় তাহলে তালাক কার্যকর হয়ে যাবে।

• স্বামী যদি তার স্ত্রীকে তালাক প্রদান করার সময় স্ত্রী যদি অন্তঃসত্তা থাকে তাহলে তালাক কার্যকর হবে না। কারণ ৭(৫) আইনে উল্লেখ করা আছে গর্ভাবস্থা অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত তালাক বা ডিভোর্স কার্যকর হবে না।

• ৯০ দিনের মধ্যেও তালাকের নোটিশটি ১ মাস পর পর ৩ বার পাঠাতে হবে।

শেষ কথা

দেওয়ার নিয়ম বা তালাক দেওয়ার নিয়মের মূল পদ্ধতি হচ্ছে একজন উকিলের মাধ্যমে তালাকের নোটিশ পাঠানো। আর তালাক কার্যকর হতে সময় লাগে ৯০ দিন।

তালাক বা ডিভোর্স দেওয়ার পরে কাবিনের টাকা বা অন্যান্য বিষয় গুলো সামনে আসতে পারে। তবে সেই বিষয় যাই হোক না কেন তালাকের নোটিশ প্রদান করার ৯০ দিন পরে তারা কার্যকর হয়ে যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম

আপডেট সময় : ০৬:৫৯:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৪

ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে তালাক হচ্ছে সর্বনিম্ন পর্যায়ের বৈধ কাজ। একজন স্ত্রী এবং স্বামীর মধ্যে যদি কোন ভাবেই বনি বনা সম্ভব না হয় তাহলে সেটির চূড়ান্ত পর্যায়ে হচ্ছে ডিভোর্স বা তালাক। কিন্তু ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই না জেনে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন।

তালাকের মাধ্যমে যদিও একজন পুরুষ এবং মহিলা মানসিকভাবে স্বস্তি পায় কিন্তু তাদের মধ্যে যদি কোন সন্তান থেকে থাকে তাহলে তার জন্য জীবন অনেকটা কঠিন হয়ে যায়। যেকোনো বৈধ কিংবা যুক্তি সংক্রান্ত কারণে একজন স্বামী এবং স্ত্রী পরস্পর থেকে আলাদা হওয়ার জন্য ডিভোর্স দিতে পারে। তবে ডিভোর্স দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু আইন মানতে হবে।

আইন অনুযায়ী ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম কিংবা কিভাবে তালাক দেওয়া হয় সে ব্যাপারে এক জীবন আইনজীবীর সাথে কথা বলে আপনাদের সাথে কিছু পরামর্শ শেয়ার করার চেষ্টা করেছি।

ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম

আইনজীবীদের মতে সাধারণত তালাক দেওয়ার জন্য প্রথমে একটি তালাকের নোটিশ পাঠানো হয়। আবার আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে কাবিন নামার ১৮ নম্বর কলামে যদি স্ত্রী ডিভোর্সের দেওয়ার অনুমতি না পেয়ে থাকেন তাহলে স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাক দেওয়া যায় না।

সে ক্ষেত্রে একজন স্ত্রী পারিবারিক আদালতে মামলা করার মাধ্যমে ডিভোর্সের নোটিশ পাঠাতে পারে। তবে এই তালাকের নোটিশ পাঠানোর বিষয়ে কিছু আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

স্বামী ও স্ত্রী অভিক্ষেত্রে তালাক দেওয়ার নিয়ম প্রায় একই রকম।

স্বামী তার স্ত্রীকে কিংবা স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক দেওয়ার নিয়ম

* মুসলিম পারিবারিক আইন ১৯৬১ সালের ৭(১) ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, কোন পুরুষ তার স্ত্রীকে কিংবা কোন মহিলা তার স্বামীকে তালাক দিতে চাইলে সবার আগে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা পৌরসভার চেয়ারম্যান কে তালাকের নোটিশ পাঠাতে হয়। তারপর ওই নোটিশের অনুলিপিটি স্বামী অথবা স্ত্রীকে পাঠাতে হবে।

* এই আইন যদি কেউ লংঘন করে তাহলে তার ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড কিংবা ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। সেই সাথে উভয় দণ্ডায় হতে পারে।

ডিভোর্স দেওয়ার নিয়ম

* তালাকের নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে ও সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান কিংবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একটি সালিশ বৈঠক গঠন করবেন। তিনি যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন তালাক রোধ করার জন্য।

স্বামী অথবা স্ত্রী যদি তালাকের নোটিশটি ৯০ দিনের ভিতর প্রত্যাহার না করে অথবা ৯০ দিন অতিবাহিত হয়ে যায় তাহলে তালাক কার্যকর হয়ে যাবে।

• স্বামী যদি তার স্ত্রীকে তালাক প্রদান করার সময় স্ত্রী যদি অন্তঃসত্তা থাকে তাহলে তালাক কার্যকর হবে না। কারণ ৭(৫) আইনে উল্লেখ করা আছে গর্ভাবস্থা অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত তালাক বা ডিভোর্স কার্যকর হবে না।

• ৯০ দিনের মধ্যেও তালাকের নোটিশটি ১ মাস পর পর ৩ বার পাঠাতে হবে।

শেষ কথা

দেওয়ার নিয়ম বা তালাক দেওয়ার নিয়মের মূল পদ্ধতি হচ্ছে একজন উকিলের মাধ্যমে তালাকের নোটিশ পাঠানো। আর তালাক কার্যকর হতে সময় লাগে ৯০ দিন।

তালাক বা ডিভোর্স দেওয়ার পরে কাবিনের টাকা বা অন্যান্য বিষয় গুলো সামনে আসতে পারে। তবে সেই বিষয় যাই হোক না কেন তালাকের নোটিশ প্রদান করার ৯০ দিন পরে তারা কার্যকর হয়ে যাবে।