কম অথবা বেশি সবাই আমরা টাকা ইনকাম করি। কিন্তু সে টাকা কি আমরা সবাই ধরে রাখতে পারি? আজকে আমি আপনাদের সাথে টাকার জমানোর টিপস নিয়ে আলোচনা করব যেগুলো অনুসরণ করে অল্প আয় থেকে অনেক বেশি সঞ্চয় করতে পারবেন।

মানুষের যে চাহিদা মিটানোর জন্য উপার্জন এবং সঞ্চয় অপরিহার্য। আপনি সারা বছর ধরে টাকা ইনকাম করছেন কিন্তু সেটা ধরে রাখতে পারছেন না। এর ফলাফল সরুপ প্রয়োজনের সময় আপনাকে মানুষের কাছে টাকা ধার চাইতে হয়। আর পৃথিবীর সবচাইতে বিরক্তিকর কাজ গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে টাকা ধার চাওয়া। তাই নিচের কয়েকটি টাকা জমানোর উপায় গুলি অনুসরণ করুন এবং টাকা সঞ্চয় করুন।

সবার আগে সঞ্চয় করা

টাকা জমানোর ক্ষেত্রে আমরা সবচাইতে যে বড় ভুল করে থাকি সেটি হলো, আগে আমরা খরচ করি। তারপরে খরচ শেষে টাকা জমানোর চেষ্টা করি। বিশ্বাস করুন এভাবে কখনোই আপনি টাকা জমাতে পারবেন না। টাকা জমানোর জন্য আপনাকে সবার আগে সঞ্চয় করতে হবে। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা সঞ্চয় কিংবা ব্যাংকের রাখার পর যে টাকা থাকবে সেটি হতে হিসাব করে খরচ করতে থাকুন। টাকা জমানোর এটি সবচাইতে ভালো উপায়।

কারণ খরচ করার পরে অবশিষ্ট টাকা থেকে কখনো সঞ্চয় হবে না।

ইনভেস্ট করুন

যদি ব্যাংকে কিংবা নগদ টাকা জমা রাখার অভ্যাস না থাকে তাহলে যত সম্ভব টাকা ইনভেস্ট করতে থাকুন। অল্প অল্প টাকা করে বিভিন্ন জমি, গোল্ড কিনে রাখা, সঞ্চয়পত্র কিনে রাখা, বিশ্বাসযোগ্য কারো বিজনেসে ইনভেস্ট করা ইত্যাদি কাজে টাকা ইনভেস্ট করুন। এতে করে আপনার সঞ্চয় বাড়বে এবং পাশাপাশি মাসে কিংবা বছর শেষে কিছু টাকা প্রফিট আসবে।

তবে টাকা ইনভেস্ট করার আগে ভালোভাবে খোঁজখবর নিন সেটি বিশ্বাসযোগ্য কিনা।

ঋণ পরিশোধ করুন

আপনার যদি লোন বা ঋণ থেকে থাকে তাহলে টাকা জমানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই টাকা জমানো শুরু করার আগে আপনার সমস্ত ঋণ এবং লোন পরিশোধ করুন। সেই সাথে প্রতিজ্ঞা করুন ভবিষ্যতে কোন পরিস্থিতি আর ঋণ করবেন না। টাকা জমানোর উপায় গুলোর মধ্যে এটিও গুরুত্বপূর্ণ।

দুর্ঘটনার জন্য কিছু টাকা আলাদা করে রাখুন

মানুষের জীবনে কখন কোন দুর্ঘটনা ঘটে যায় সেটি আগে থেকেই অনুমান করা অসম্ভব। তাই হঠাৎ চিকিৎসা প্রয়োজন সহ নানন দুর্ঘটনার জন্য কিছু টাকা আলাদা করে রেখে দিন। এতে করে বিপদের সময় আপনার সঞ্চয় হতে টাকা খরচ করতে হবে না এবং আমানত অক্ষয় থাকবে।

টাকা জমানোর টিপস

কারো সাথে টাকার ব্যাপারে শেয়ার না করা

আপনি যদি আপনার ইনকাম এবং সেভিংসের ব্যাপারে মানুষের সাথে বেশি বেশি আলাপ-আলোচনা করতে থাকেন তাহলে আপনি আর যাই হোক টাকা সঞ্চয় করতে পারবেন না। এটিকে কুপ্রভাব বলতে পারেন। অথবা দেখবেন মানুষ নিজের বিপদে আপনার কাছে টাকা ধার চাইতে আসছে। এরকম পরিস্থিতিতে হয় আপনাকে টাকা ধার দিতে হবে না হলে সম্পর্ক নষ্ট হবে। তাই নিজের সঞ্চয় সম্পর্কে মানুষের সাথে কম আলাপ-আলোচনা করুন। যদিও এটা টাকা জমানার উপায় নয় কিন্তু এই পদ্ধতিতে আপনার সঞ্চয়ে বাড়বে।

বাড়তি জিনিসে কম খরচ করা

প্রতিমাসের খরচ গড়ে একটি তালিকা তৈরি করুন। তারপর দেখুন ওই তালিকা অনুযায়ী কোন খরচটি আপনি অতিরিক্ত করেছেন। পরের মাসে সেই খরচটি বাদ দিন। দেখবেন আপনার খরচ কমে গেছে এবং বেশি বেশি টাকা জমাতে পারছেন।

বিলাসিতা পরিহার

আপনি তখনই বিলাসিতা করবেন যখন আপনার অঢেল পরিমাণে সম্পত্তি থাকবে। কাজ না করেও প্রতি মাসে আপনার আয় হতে থাকবে। কিন্তু জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে বিলাসিতা পরিহার করুন। এতে করে বাড়তি খরচে আপনার ভবিষ্যতের আর্থিক অবস্থা শুধু খারাপই হতে থাকবে।

বাড়তি আয়ের উৎস তৈরি করুন

ধরুন আপনি একটা চাকরি করেন কিংবা ছোট একটি বিজনেস আছে, সেটির পাশাপাশি ইনকামের আরো একটি উৎসব তৈরি করুন। মূল উৎস থেকে যাবতীয় খরচ মিটানোর পাশাপাশি কিছু টাকা সঞ্চয় করবেন। আর বাড়তি আয়ের উৎসের পুরো টাকাটাই সেভিংস করবেন। করে আপনার টাকা জমানোর উপায় একটি আরও সহজ হবে। প্রয়োজনে বাড়তি আয়োজনে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সহযোগিতা নেন। সবাই মিলে আয়ের উৎস তৈরি করলে অনেক দ্রুত ধনী হতে পারবেন।

আশা করি টাকা জমানার উপায় গুলি আপনাদের আর্থিক জীবনে অনেক ভালো সাহায্য করবে। এরকম আরো প্রয়োজনীয় আর্টিকেল করতে আমাদের ওয়েবসাইটে সাথে থাকুন।