কিভাবে জান্নাতি ও জাহান্নামি লোক চিনবেন
- আপডেট সময় : ১০:১৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪ ২২ বার পড়া হয়েছে
জান্নাতী ও জাহান্নামী লোক চেনার উপায় সম্পর্কে আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো। আসলে কারা জান্নাতে যাবেন এবং কারা জাহান্নামে যাবেন সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে বলা উচিত নয়। তবুও পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াত এবং হদিস দ্বারা মানুষের কর্মফল, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে চেনা যায় জান্নাতি এবং জাহান্নামি লোক। চলুন সেই সকল বিষয় সম্পর্কে আজকে জেনে নেই।
এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে যত গুলো আয়াত রয়েছে সেগুলোর মূল কথা হচ্ছে যে সকল ব্যক্তি শিরক মুক্ত, ঈমানদার সেই সাথে মহান আল্লাহতালা এবং তার রাসূলের যাবতীয় আদেশ-নিষেধ মেনে করে তারা জান্নাতে যাবেন। আর যে সকল ব্যক্তিরা মহান আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রাসূলের অবাধ্য, মুশরিক, মুনাফিক এবং অন্তরে অহংকার রয়েছে তারা জাহান্নামে যাবে। কিন্তু তারপরেও নিশ্চিত ভাবে এটি বলা যায় না যে সে জান্নাতে যাবে অথবা জাহান্নামে যাবে।
একজন মানুষ জীবনে শেষ পর্যায়ে এসেও মহান আল্লাহতায়ালার ক্ষমা লাভ করতে পারে এবং জান্নাতের লোকদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। মহান আল্লাহ তা’আলা অত্যন্ত দয়ালু। তাই তার দয়া এবং অনুগ্রহের মাধ্যমে যেকোনো লোক আখিরাতে ক্ষমা পেতে পারে। সেই সাথে অনেক সময় সমাজের ভালো লোক গুলো ভেতরে ভেতরে অহংকার থাকে কিংবা নানা রকম নাফরমানী মূলক কাজ করে। তাই আমরা নির্দিষ্ট করে কখনোই এ ব্যাপারে কাউকে বলবো না।
জান্নাতি ও জাহান্নামি লোক চেনার উপায় সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদিস রয়েছে। যেখানে তিনি জান্নাতি এবং জাহান্নামি লোকদের দুনিয়ার আচরণগত কিংবা চরিত্র কেমন হবে সে ব্যাপারে কিছু নমুনা দিয়েছেন। এই হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে হারিসা ইবনে ওয়াহাব (রা.) থেকে। আমাদের প্রিয় নবী রাসুল (সা.) বলেছেন, আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতি লোকদের সম্পর্কে অবহিত করবো না? তারা দুনিয়াতে হবে দুর্বল এবং মাজলুম প্রকৃতির। যদি তারা কোন কথায় আল্লাহর উপর কসম করে ফেলে তাহলে মহান আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে তা পূর্ণ করে দেন। আর যারা অবাধ্য, ঝগড়াটে ও অহংকারী তারা যাবে জাহান্নামে। (সহীহ বুখারি: ৬২০২)
কিভাবে জান্নাতি ও জাহান্নামি লোক চিনবেন
উক্ত হাদিসটি দ্বারা আমাদের প্রিয় নবী রাসুল (সা.) দুনিয়াতে জান্নাতি এবং জাহান্নামি লোকদের আচরণ গত বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন। অর্থাৎ জান্নাতি লোক চেনার উপায় হচ্ছে তারা অত্যন্ত দুর্বল, কোমল এবং নরম প্রকৃতির হবে। তারা কথার মাধ্যমে কাউকে আঘাত করবে না এবং অত্যাচার করবে না। জান্নাতি ব্যাক্তি কারো উপরে জুলুম করবে না। তারা যদিও ক্ষমতার অধিকারী হয় তবুও তারা নরম মনের হবে।
পক্ষান্তরে জাহান্নামি লোক চেনার উপায় হচ্ছে তারা হবে ঝগড়াটে প্রকৃতির। যে কারো সঙ্গেই তারা ঝগড়া বাধিয়ে দেবে। তারা কারো কথা শুনবে না এবং সকল ক্ষেত্রে অবাধ্য বৈশিষ্ট্যের হবে। সব কাজেই তারা হবে অত্যন্ত অহংকারী। পবিত্র কুরআন এবং সুন্নাহর আলোকে এই সকল বদ বৈশিষ্ট্যের অধিকারীরা জাহান্নামে যাবে। হাদিসে এ ব্যাপারে উল্লেখ করা হয়েছে।
আমাদের শেষ কথা
যাদের মনের মধ্যেও আখিরাতে ভয় থাকে, আল্লাহ তাআলা এবং নবী রাসূলের নির্দেশিত পথ মেনে চলে তারা সবসময় নরম স্বভাবের হয়। পরকালের জীবন সম্পর্কে সর্বদা তারা চিন্তা করে। দুনিয়ার সুখ-শান্তি ছেড়ে একসময় সবাইকে চলে যেতে হবে। কিন্তু পৃথিবীতে সামান্য সুখের জন্য তারা পরকালকে কখনোই বরবাদ করে না। তাই নিজেকে দুর্বল ভেবে সবসময় চলাফেরা করতে থাকে। তাহলে বুঝতে পারে এই দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবন আসলে কিছুই নয়। তাইতো জান্নাতি লোক চেনার উপায় গুলি সম্পর্কে আমরা সহজেই বুঝতে পারি।
আর যারা দুনিয়ার লোভ-লালসায় লিপ্ত তারা মনে করে পরকালে তাদের কিছুই হবে না কিংবা আখিরাত বলে কিছু নেই। তাইতো তাদের মনের মধ্যে কোন ভয় থাকেনা এবং চলাফেরায় সেই বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়। এটাই জাহান্নামি লোক চেনার উপায় গুলি বোঝা যায়।
আশা করি জান্নাতি ও জাহান্নামি লোক চেনার উপায় গুলি সম্পর্কে আপনার কিছুটা ধারণা লাভ করতে পেরেছেন। আমরা সব সময় দুনিয়ার সকল মায়া-মোহ ত্যাগ করে আখিরাতে কথা চিন্তা করব। এতে করে মনের মধ্যেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবর্তন চলে আসবে। আল্লাহ তায়ালা সবাইকে হেদায়েত দান করুন। আমিন।
এনজিও থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে প্রবেশ করুন।