চাকরি ছাড়ার আগে যে বিষয় গুলি ভেবে দেখবেন

- আপডেট সময় : ০৫:৫৪:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ অগাস্ট ২০২৪ ৪৭ বার পড়া হয়েছে
চাকরি ছাড়ার আগে আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি চিন্তা করি না। অনেক সময় আমরা নতুন সুযোগের সন্ধানে কিংবা বিভিন্ন কারণে চাকরি ছেড়ে দেই। তবে আপনি যে কারণেই এটি ছেড়ে যান না কেনো আপনাকে কিছু বিষয় অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত। কারণ চাকরি ছাড়ার মতো সিদ্ধান্তটি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।
চাকরি ছাড়ার আগে যে বিষয় গুলি আপনাকে বিবেচনায় রাখতে হবে
আর্থিক প্রস্তুতি
আপনি আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে কোন রকম চাকরি না করে আগামী ৩ থেকে ৬ মাস স্বচ্ছলভাবে চলতে পারবেন। যদি আপনার এরকম সঞ্চয় থেকে থাকে তাহলে আপনি চাকরি ছাড়তে পারেন। কারণ নতুন কাজে যোগ দিতে অনেক সময় দেরি হতে পারে কিংবা একটি চাকরি ছাড়ার পর নতুন আরেকটা চাকরি পরের মাসেই পেয়ে যাবেন এরকমটি নাও হতে পারে। তাই অন্তত আর্থিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন।
ক্যারিয়ারের উপর প্রভাব
চাকরি ছাড়ার আগে সবচাইতে যে বিষয়টি বিবেচনা করে করা উচিত সেটি হচ্ছে আপনার ক্যারিয়ারের বর্তমান বাজার। যদি এরকমটি হয় আপনি চাকরি ছাড়া সাথে সাথে আপনার দক্ষতা অনুযায়ী আরো ভালো বেতনে যেকোনো সময় চাকরি পেয়ে যাবেন তাহলে তো কোন সমস্যা নেই।
কিন্তু আপনি যেই ফিল্ডে অভিজ্ঞ সেই বিষয়ে চাকরির বাজারে অবস্থা যদি খুব খারাপ থাকে তাহলে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিন। কারণ অভিজ্ঞ এবং দক্ষ সেক্টরগুলো ছাড়া চাকরি পাওয়া বেশ কঠিন বর্তমান বাজারে।
শারীরিক সুস্থতা
আপনার বর্তমান চাকরিতে যদি আপনার শারীরিক এবং মানসিক অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়ায় তাহলে সেটি ছেড়ে দেওয়াই ভালো। কারণ মানসিক এবং শারীরিকভাবে সুস্থ না থাকলে আপনি ক্যারিয়ারে কখনোই উন্নতি করতে পারবেন না।
অনেক সময় কাজের চাপ এবং ধরন অনুযায়ী আমরা পরিবার এবং আত্মীয়-স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরি। এতে করে মনের মধ্যে সব সময় বিষন্নতা এবং হতাশা কাজ করে।
কাজের পরিবেশ
চাকরি ছাড়ার আগে আপনি এটি ভালো করে ভেবে নিন যে বর্তমানে আপনার কর্মস্থলের পরিবেশটি কেমন। যদি কর্মস্থলে পরিবেশ এবং ম্যানেজমেন্ট ভালো থাকে তাহলে অন্যান্য আনুষঙ্গিক সমস্যা গুলো মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
আর যদি কর্মক্ষেত্র আপনার কাছে বিষাক্ত মনে হয় কিংবা অভ্যন্তরীণ রাজনীতির শিকার হন তাহলে চাকরি ছাড়ার পরিকল্পনাটি আপনার জন্য ভালো সিদ্ধান্ত। তবে যে কারণেও চাকরি ছাড়েন না কেন কর্ম ক্ষেত্রে সাথে কখনোই সম্পর্ক নষ্ট করবেন না।
বিকল্প আয়ের উৎস
শুধুমাত্র চাকরি ছাড়ার আগে যে বিকল্প আয়ের উৎস সন্ধান করতে হবে ব্যাপারটি তা নয়। চাকরি করাকালীন সময়ে আমাদের সবারই উচিত একটি বিকল্প আয়ের উৎস ঠিক করে রাখা। যাতে করে আপদকালীন সময়ে পরিবার পরিজন নিয়ে কোন সমস্যায় পরতে না হয়।
তাই বিকল্প আয়ের উৎস গুলি সম্পর্কে এখন থেকে গবেষণা করুন এবং আপনার জন্য একটি ভালো সুযোগ খুঁজে বের করুন।
চাকরি ছাড়ার আগে যে বিষয় গুলি ভেবে দেখবেন
বসের খারাপ আচরণ
অনেক সময় আমরা বসের খারাপ আচরণে খুবই হতাশ হয়ে পড়ি। এতে করে কাজের মনোযোগ নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু একটা বিষয় মনে রাখবেন সকল কোম্পানিতেই এরকম সমস্যা হয়ে থাকে। তাই বসের চাহিদা অনুযায়ী চলার চেষ্টা করুন এবং নিজের মনকে শান্ত রাখুন।
যদিও মানসিক স্বাস্থ্য কাজের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু যদি সুযোগ থাকে একই কর্ম ক্ষেত্রে অন্য বসের অধীনে কাজ করার তাহলে সেজন্য চেষ্টা করতে পারেন। আর যদি একেবারে সম্ভব না হয় তাহলে চাকরি ছেড়ে দিন।
সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা
চাকরি ছাড়ার আগে আপনি যদি সিদ্ধান্তহীনতায় ভূগতে থাকেন যে আপনার কোনটি করা উচিত, তাহলে এই মুহূর্তে কোন সিদ্ধান্ত না নেওয়াই ভালো। যখন আপনি আপনার চাহিদার ব্যাপারে এবং ডিসিশন এর ব্যাপারে খুবই কনফার্ম এবং কনফিডেন্স থাকবেন তখনই সিদ্ধান্ত নিন। কারণ ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার চাইতে কোন সিদ্ধান্ত না নেওয়াই ভালো।
চাকরি ছাড়ার বিনিময়ে কি পাবেন
আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে সচ্ছলভাবে চলার জন্য চাকরির খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই চাকরি চলে গেলে অনেক সময় ফ্যামিলি নিয়ে বিপদে পড়তে হয়।
আপনি একটু ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখুন চাকরি ছাড়ার বিনিময়ে আপনি কি পাবেন? চাকরি ছাড়লে যদি প্রাপ্তিটা বড় হয় তাহলে তো কোন সমস্যা নেই। আর যদি তেমন বিশেষ কোনো কারণ না থাকে তাহলে চাকুরী চালিয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ বাজারে চাকরির পরিবেশ অনেকটাই অস্থিতিশীল।
প্রমোশনের সুবিধা
আপনি বর্তমানে যে জায়গায় কাজ করছেন বা চাকরি ছেড়ে দেয়ার কথা ভাবছেন সেখানে যদি আপনার ক্যারিয়ার উন্নতি হতে থাকে তাহলে সেটাই না ছাড়াই ভালো।
আর যদি এমনটা হয়ে থাকে অনেকদিন ধরে চাকরি করছেন কিন্তু কোন উন্নতি নেই কিংবা প্রমোশন নেই অথবা বেতন বৃদ্ধি নেই তাহলে হয় আপনার সেটি ছেড়ে যাওয়া উচিৎ না হলে আপনার কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি করা উচিত।
আশা করি চাকরি ছাড়ার আগে যে বিষয় গুলি আপনাকে বিবেচনায় আনতে হবে সেগুলো সম্পর্কে আপনি ধারণা লাভ করেছেন। তাই চাকরিতে কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি পরবর্তী জীবনের আর্থিক নিরাপত্তা গুলি নিয়ে আগে থেকে পরিকল্পনা করুন। আপনি পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে জীবন কাটাতে পারেন।
পুলিশের ১১ দফা দাবি বিস্তারিত জানতে এখানে প্রবেশ করুন।