এনজিও থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৫৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪ ৩১ বার পড়া হয়েছে

এনজিও থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। ছোট বিজনেস কিংবা বিভিন্ন প্রয়োজনে এনজিও লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানার প্রয়োজন পড়ে। কারণ শহর কিংবা গ্রামের সব এলাকার মানুষ কোন না কোন বিজনেস, সম্পত্তি ক্রয়, বাড়িঘর নির্মাণ ইত্যাদি কাজে ঋণ গ্রহণ করে থাকে। দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি উচ্চবিত্তরাও এর সাথে জড়িত।

যদিও ঋণ প্রদান করার জন্য বাংলাদেশে অনেক ব্যাংক রয়েছে তবুও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে বড় বড় এনজিও প্রতিষ্ঠান গুলি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এদের জনপ্রিয়তাও অনেক। কারণ এই সকল এনজিও থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম খুবই সহজ এবং অল্প সময় সেটা হাতে পাওয়া যায়। এছাড়াও সাপ্তাহিক কিংবা মাসিক ভিত্তিতে কিস্তি প্রদান করা সহজ কেননা বাড়ির পাশেই যে কোনো কেন্দ্র গুলোতে এই অর্থ প্রদান করা যায়।

আপনি যদি এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করার পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে এই পুরো আর্টিকেলটি আপনার জন্য। তাই ধৈর্য সহকারে পড়ুন এবং জেনে নিন এনজি লোন সম্পর্কে খুঁটিনাটি বিষয় সমূহ।

বাংলাদেশের স্বনামধন্য ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণকারী এনজিও প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ব্যুরো বাংলাদেশ, ব্রাক, আশা, গ্রামীন, এসএসএস ইত্যাদি।

তুলনামূলকভাবে সব প্রতিষ্ঠানের লোন নেওয়ার নিয়ম একই রকম।

লোনের বিভিন্ন ক্যাটাগরি

ব্যংকের মতো এনজিও প্রতিষ্ঠানেও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে লোন প্রদান করা হয়ে থাকে। শহর এলাকায় বাড়ি করার জন্য, বিজনেস করার জন্য ইত্যাদি ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন অ্যামাউন্টের অর্থ ঋণ প্রদান করা হয়।

তাই লোন নেওয়ার জন্য এটি নির্ধারণ করা খুবই জরুরী। টাকার অ্যামাউন্ট এবং ক্যাটাগরি হিসেবে লোনের মেয়াদ এবং ইন্টারেস্টের পরিমাণ কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে।

এনজিও থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম কি কি

নিয়ম, শর্ত বা যোগ্যতা গুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো। উল্লেখিত শর্ত গুলোর সবগুলো যদি পূরণ হয় তাহলে অবশ্যই আপনার সহজে ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন।

১। সর্বপ্রথম আপনার বয়স অবশ্যই ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। এর থেকে কম অথবা বেশি হলে আপনি কখনোই ঋণের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।

২। কিছু কিছু এনজিও থেকে লোন নেওয়ার নিয়মে উল্লেখ থাকে যে গ্রাহককে অবশ্যই বিবাহিত হতে হবে। তবে সকল প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়। মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি বেশি প্রযোজ্য হয়ে থাকে।

৩। ঋণ গ্রহণ করার আগে আপনাকে অবশ্যই সেই প্রতিষ্ঠানে সদস্য হতে হবে। সদস্য হওয়ার জন্য ছবি, ভোটার আইডি কার্ড এবং সামান্য কিছু ফি জমা প্রদান করতে হয়।

৪। আপনি যে পরিমাণ লোনই গ্রহণ করেন না কেন এক বছর মেয়াদে সর্বোচ্চ ৪৫ থেকে ৪৬ টি কিস্তুির মধ্যে সেটি পরিশোধ করতে হবে। আপনি যদি বিজনেস কিংবা অন্যান্য কাজে অধিক সময়ের জন্য লোন নিয়ে থাকেন তাহলে কিস্তির পরিমাণও ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারণ ১-৫ বছর মেয়াদেও বিভিন্ন সংখ্যায় কিস্তি পরিশোধ করা যায়।

আপনি যদি মাসিক কিস্তির ভিত্তিতে অর্থ গ্রহণ করে থাকেন তাহলে সর্বমোট ১৩ টি এবং আরো একটির অর্ধেক পরিশোধ করতে হতে পারে। সেই সাথে বছরের প্রতিটি মাসে অবশ্যই নির্ধারিত তারিখে টাকা জমা দিতে হবে। আর যদি আপনি সাপ্তাহিক ভিত্তিতে কিস্তি প্রদান করে থাকেন তাহলে প্রতি সপ্তাহের নির্ধারিত দিনে অর্থ জমা প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে কিস্তি প্রদানের দিন যদি সরকারি ছুটি থাকে তাহলে ওই সপ্তাহে অর্থ নেওয়া হয় না। কিন্তু মাসিক কিস্তির ক্ষেত্রে যদি নির্ধারিত দিনের থাকে তাহলে পরবর্তী যেকোনো দিন নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

৫। এনজিও লোন নেওয়ার নিয়ম গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্থানীয় কোন আত্মীয় কিংবা কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে অবশ্যই জামিনদার হতে হবে। আপনার অবর্তমানে যার কিনা সেই ঋণ শোধ করার মতো সামর্থ্য রয়েছে।

৬। যদি আপনি পূর্বে কোন প্রতিষ্ঠান হতে লোন গ্রহন করে থাকেন এবং সেগুলো ঠিকঠাক ভাবে পরিশোধ করেননি তাহলে আপনি কখনোই ঋণ গ্রহণের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।

৭। এনজিও ঋণ গ্রহণের নিয়ম গুলোর মধ্যে আরেকটি অন্যতম শর্ত হচ্ছে আপনাকে অবশ্যই সেই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা থাকতে হবে এবং একটি বাড়ি থাকতে হবে। যদি আপনি ভাড়াটিয়া হন কিংবা আপনার বাসা অন্য কোথাও থাকে তাহলে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।

এনজিও লোন নিতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হবে

ব্যাংকিং বা যেকোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণের জন্য অবশ্যই কিছু না কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। নিম্নে সেগুলোর তালিকা উল্লেখ করা হলো।

• সর্বপ্রথম আপনাকে এনজিও হতে একটি ফরম নিয়ে পূরণ করে জমা প্রদান করতে হবে।

• গ্রাহকের দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি লাগবে। তবে প্রতিষ্ঠান ভেদে এই ছবির পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে।

• জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি লাগবে, নাগরিক সনদপত্র অথবা চেয়ারম্যানের সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হবে।

• আপনি যদি বড় কোন অ্যামাউন্টের অর্থ ঋণ নিতে চান তাহলে জমির দলিল এবং পর্চা অবশ্যই জমা প্রদান করতে হবে।

• কোন প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী হন তাহলে সেখানকার পে স্লিপ অথবা স্যালারি শিটের একটি কপি প্রয়োজন হবে। আপনার বেতন যদি ব্যাংকের মাধ্যমে হয়ে থাকে তাহলে সর্বনিম্ন ৬ মাস থেকে ১ বছরে ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে পারে।

• আপনার যদি ট্যাক্স প্রদানের মত আয় থাকে তাহলে অবশ্যই ট্যাক্স রিটার্নের কাগজ দাখিল করতে হবে।

এনজিও থেকে লোন নেওয়ার পদ্ধতি গুলো কি কি

আগেই বলেছি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলো ঋণ প্রদান করে থাকে। ক্ষুদ্র এবং মাঝারী গুলোতে সাধারণত ১৫ হাজার টাকা থেকে নিয়ে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত লোন তোলা যায়। এসকল ঋণের মেয়াদ সাধারণত ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে।

এমনকি গ্রাহককে শিক্ষা লোন, স্যানিটারি লোন, মৌসুমী লোন ইত্যাদিও প্রদান করা হয়ে থাকে।

লোনের উপর ভিত্তি করে কত টাকা ইন্টারেস্ট প্রদান করতে হবে

যদিও এটি সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আলাদা আলাদা ভাবে পলিসিতে উল্লেখ করা থাকে। তবে বাংলাদেশের জনপ্রিয় এনজিও গুলোতে সাধারণত ১ লাখে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ইন্টারেস্ট প্রদান করতে হয়। তবে এর অর্থ গ্রহণের সময় বিভিন্ন ফি বাবদ আরো কিছু টাকা খরচ করতে হবে।

যেমন ফরমের জন্য টাকা, বীমার জন্য টাকা ইত্যাদি। ইন্টারেস্টের পরিমান কোন সময় পরিবর্তিত হতে পারে।

এনজিও থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম সংক্রান্ত কিছু তথ্য

• আপনি যদি একবার লোনের অর্থ গ্রহণ করেন এবং মাসিক কিস্তি মাসে কিংবা সাপ্তাহিক যাই হোক না কেন আপনাকে অবশ্যই যথা সময় পরিশোধ করতে হবে। এ সময় অন্য কোন অজুহাত প্রদান করা চলবে না।

• জামিনদারের পাশাপাশি অবশ্যই নমিনীর কাগজ এবং ভোটার আইডি কার্ড, ছবি ইত্যাদি প্রদান করতে হবে। আপনার অবর্তমানে জামিনদার যেরকম ঋণের দায়ভার গ্রহণ করবে ঠিক তেমনি ভাবে নমিনীও আপনার অর্থ গুলি গ্রহণ করতে পারবে।

• আপনি যদি একবার লোন গ্রহন করে সেটির টাকা পরিশোধের জন্য তালবাহানা করেন তাহলে পরবর্তীতে আর কোন লোন উঠাতে পারবেন না।

• বর্তমানের ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তির যুগে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে অনেক প্রতিষ্ঠানের অর্থ পরিশোধ করা যায়।

• বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী মূল গ্রাহক যদি কোন কারণে মারা যায় তাহলে তার বকেয়া কিস্তি গুলোর অর্থ মওকুফ করা হয়। সেই সাথে শর্ত অনুযায়ী জীবন বিমার অর্থও প্রদান করা হয়।

আমাদের শেষ কথা

বর্তমানে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সকল ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রয়োজন হয় ক্ষুদ্র ঋণের। তাইতো এনজিও থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকে জানার আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন। আশা করি এ সকল বিষয়ে আপনাদের সুস্পষ্ট ধারণা হয়েছে।

আধুনিক রক্তচাপ মাপার যন্ত্র কিভাবে কাজ করে এবং দাম কত? বিস্তারিত জানতে এখানে প্রবেশ করুন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

এনজিও থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

আপডেট সময় : ১০:৫৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। ছোট বিজনেস কিংবা বিভিন্ন প্রয়োজনে এনজিও লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানার প্রয়োজন পড়ে। কারণ শহর কিংবা গ্রামের সব এলাকার মানুষ কোন না কোন বিজনেস, সম্পত্তি ক্রয়, বাড়িঘর নির্মাণ ইত্যাদি কাজে ঋণ গ্রহণ করে থাকে। দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি উচ্চবিত্তরাও এর সাথে জড়িত।

যদিও ঋণ প্রদান করার জন্য বাংলাদেশে অনেক ব্যাংক রয়েছে তবুও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে বড় বড় এনজিও প্রতিষ্ঠান গুলি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এদের জনপ্রিয়তাও অনেক। কারণ এই সকল এনজিও থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম খুবই সহজ এবং অল্প সময় সেটা হাতে পাওয়া যায়। এছাড়াও সাপ্তাহিক কিংবা মাসিক ভিত্তিতে কিস্তি প্রদান করা সহজ কেননা বাড়ির পাশেই যে কোনো কেন্দ্র গুলোতে এই অর্থ প্রদান করা যায়।

আপনি যদি এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করার পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে এই পুরো আর্টিকেলটি আপনার জন্য। তাই ধৈর্য সহকারে পড়ুন এবং জেনে নিন এনজি লোন সম্পর্কে খুঁটিনাটি বিষয় সমূহ।

বাংলাদেশের স্বনামধন্য ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণকারী এনজিও প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ব্যুরো বাংলাদেশ, ব্রাক, আশা, গ্রামীন, এসএসএস ইত্যাদি।

তুলনামূলকভাবে সব প্রতিষ্ঠানের লোন নেওয়ার নিয়ম একই রকম।

লোনের বিভিন্ন ক্যাটাগরি

ব্যংকের মতো এনজিও প্রতিষ্ঠানেও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে লোন প্রদান করা হয়ে থাকে। শহর এলাকায় বাড়ি করার জন্য, বিজনেস করার জন্য ইত্যাদি ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন অ্যামাউন্টের অর্থ ঋণ প্রদান করা হয়।

তাই লোন নেওয়ার জন্য এটি নির্ধারণ করা খুবই জরুরী। টাকার অ্যামাউন্ট এবং ক্যাটাগরি হিসেবে লোনের মেয়াদ এবং ইন্টারেস্টের পরিমাণ কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে।

এনজিও থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম কি কি

নিয়ম, শর্ত বা যোগ্যতা গুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো। উল্লেখিত শর্ত গুলোর সবগুলো যদি পূরণ হয় তাহলে অবশ্যই আপনার সহজে ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন।

১। সর্বপ্রথম আপনার বয়স অবশ্যই ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। এর থেকে কম অথবা বেশি হলে আপনি কখনোই ঋণের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।

২। কিছু কিছু এনজিও থেকে লোন নেওয়ার নিয়মে উল্লেখ থাকে যে গ্রাহককে অবশ্যই বিবাহিত হতে হবে। তবে সকল প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়। মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি বেশি প্রযোজ্য হয়ে থাকে।

৩। ঋণ গ্রহণ করার আগে আপনাকে অবশ্যই সেই প্রতিষ্ঠানে সদস্য হতে হবে। সদস্য হওয়ার জন্য ছবি, ভোটার আইডি কার্ড এবং সামান্য কিছু ফি জমা প্রদান করতে হয়।

৪। আপনি যে পরিমাণ লোনই গ্রহণ করেন না কেন এক বছর মেয়াদে সর্বোচ্চ ৪৫ থেকে ৪৬ টি কিস্তুির মধ্যে সেটি পরিশোধ করতে হবে। আপনি যদি বিজনেস কিংবা অন্যান্য কাজে অধিক সময়ের জন্য লোন নিয়ে থাকেন তাহলে কিস্তির পরিমাণও ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারণ ১-৫ বছর মেয়াদেও বিভিন্ন সংখ্যায় কিস্তি পরিশোধ করা যায়।

আপনি যদি মাসিক কিস্তির ভিত্তিতে অর্থ গ্রহণ করে থাকেন তাহলে সর্বমোট ১৩ টি এবং আরো একটির অর্ধেক পরিশোধ করতে হতে পারে। সেই সাথে বছরের প্রতিটি মাসে অবশ্যই নির্ধারিত তারিখে টাকা জমা দিতে হবে। আর যদি আপনি সাপ্তাহিক ভিত্তিতে কিস্তি প্রদান করে থাকেন তাহলে প্রতি সপ্তাহের নির্ধারিত দিনে অর্থ জমা প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে কিস্তি প্রদানের দিন যদি সরকারি ছুটি থাকে তাহলে ওই সপ্তাহে অর্থ নেওয়া হয় না। কিন্তু মাসিক কিস্তির ক্ষেত্রে যদি নির্ধারিত দিনের থাকে তাহলে পরবর্তী যেকোনো দিন নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

৫। এনজিও লোন নেওয়ার নিয়ম গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্থানীয় কোন আত্মীয় কিংবা কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে অবশ্যই জামিনদার হতে হবে। আপনার অবর্তমানে যার কিনা সেই ঋণ শোধ করার মতো সামর্থ্য রয়েছে।

৬। যদি আপনি পূর্বে কোন প্রতিষ্ঠান হতে লোন গ্রহন করে থাকেন এবং সেগুলো ঠিকঠাক ভাবে পরিশোধ করেননি তাহলে আপনি কখনোই ঋণ গ্রহণের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।

৭। এনজিও ঋণ গ্রহণের নিয়ম গুলোর মধ্যে আরেকটি অন্যতম শর্ত হচ্ছে আপনাকে অবশ্যই সেই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা থাকতে হবে এবং একটি বাড়ি থাকতে হবে। যদি আপনি ভাড়াটিয়া হন কিংবা আপনার বাসা অন্য কোথাও থাকে তাহলে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।

এনজিও লোন নিতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হবে

ব্যাংকিং বা যেকোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণের জন্য অবশ্যই কিছু না কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। নিম্নে সেগুলোর তালিকা উল্লেখ করা হলো।

• সর্বপ্রথম আপনাকে এনজিও হতে একটি ফরম নিয়ে পূরণ করে জমা প্রদান করতে হবে।

• গ্রাহকের দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি লাগবে। তবে প্রতিষ্ঠান ভেদে এই ছবির পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে।

• জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি লাগবে, নাগরিক সনদপত্র অথবা চেয়ারম্যানের সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হবে।

• আপনি যদি বড় কোন অ্যামাউন্টের অর্থ ঋণ নিতে চান তাহলে জমির দলিল এবং পর্চা অবশ্যই জমা প্রদান করতে হবে।

• কোন প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী হন তাহলে সেখানকার পে স্লিপ অথবা স্যালারি শিটের একটি কপি প্রয়োজন হবে। আপনার বেতন যদি ব্যাংকের মাধ্যমে হয়ে থাকে তাহলে সর্বনিম্ন ৬ মাস থেকে ১ বছরে ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে পারে।

• আপনার যদি ট্যাক্স প্রদানের মত আয় থাকে তাহলে অবশ্যই ট্যাক্স রিটার্নের কাগজ দাখিল করতে হবে।

এনজিও থেকে লোন নেওয়ার পদ্ধতি গুলো কি কি

আগেই বলেছি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলো ঋণ প্রদান করে থাকে। ক্ষুদ্র এবং মাঝারী গুলোতে সাধারণত ১৫ হাজার টাকা থেকে নিয়ে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত লোন তোলা যায়। এসকল ঋণের মেয়াদ সাধারণত ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে।

এমনকি গ্রাহককে শিক্ষা লোন, স্যানিটারি লোন, মৌসুমী লোন ইত্যাদিও প্রদান করা হয়ে থাকে।

লোনের উপর ভিত্তি করে কত টাকা ইন্টারেস্ট প্রদান করতে হবে

যদিও এটি সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আলাদা আলাদা ভাবে পলিসিতে উল্লেখ করা থাকে। তবে বাংলাদেশের জনপ্রিয় এনজিও গুলোতে সাধারণত ১ লাখে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ইন্টারেস্ট প্রদান করতে হয়। তবে এর অর্থ গ্রহণের সময় বিভিন্ন ফি বাবদ আরো কিছু টাকা খরচ করতে হবে।

যেমন ফরমের জন্য টাকা, বীমার জন্য টাকা ইত্যাদি। ইন্টারেস্টের পরিমান কোন সময় পরিবর্তিত হতে পারে।

এনজিও থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম সংক্রান্ত কিছু তথ্য

• আপনি যদি একবার লোনের অর্থ গ্রহণ করেন এবং মাসিক কিস্তি মাসে কিংবা সাপ্তাহিক যাই হোক না কেন আপনাকে অবশ্যই যথা সময় পরিশোধ করতে হবে। এ সময় অন্য কোন অজুহাত প্রদান করা চলবে না।

• জামিনদারের পাশাপাশি অবশ্যই নমিনীর কাগজ এবং ভোটার আইডি কার্ড, ছবি ইত্যাদি প্রদান করতে হবে। আপনার অবর্তমানে জামিনদার যেরকম ঋণের দায়ভার গ্রহণ করবে ঠিক তেমনি ভাবে নমিনীও আপনার অর্থ গুলি গ্রহণ করতে পারবে।

• আপনি যদি একবার লোন গ্রহন করে সেটির টাকা পরিশোধের জন্য তালবাহানা করেন তাহলে পরবর্তীতে আর কোন লোন উঠাতে পারবেন না।

• বর্তমানের ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তির যুগে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে অনেক প্রতিষ্ঠানের অর্থ পরিশোধ করা যায়।

• বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী মূল গ্রাহক যদি কোন কারণে মারা যায় তাহলে তার বকেয়া কিস্তি গুলোর অর্থ মওকুফ করা হয়। সেই সাথে শর্ত অনুযায়ী জীবন বিমার অর্থও প্রদান করা হয়।

আমাদের শেষ কথা

বর্তমানে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সকল ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রয়োজন হয় ক্ষুদ্র ঋণের। তাইতো এনজিও থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকে জানার আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন। আশা করি এ সকল বিষয়ে আপনাদের সুস্পষ্ট ধারণা হয়েছে।

আধুনিক রক্তচাপ মাপার যন্ত্র কিভাবে কাজ করে এবং দাম কত? বিস্তারিত জানতে এখানে প্রবেশ করুন।